কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানা বিড়ম্বনা
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানিতে বিড়ম্বনা হয়ে উঠছে কচুরিপানা। কচুরিপানা অপসারণ করা খুবই জরুরি জানান ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টরা। রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলার লোকজনের শহরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম নৌপথ। কচুরিপানার কারণে শুভলং, বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাছড়িসহ আরো অনেক জায়গায় নৌপথে লঞ্চ ও যাত্রীবাহী ছোট-বড় অনেক ইঞ্জিনচালিত বোট চলাচলেও যাত্রীগণ বিড়ম্বনায় পড়ছেন। কচুরিপানার বিড়ম্বনায় পড়া লোকজন জানায়, কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন স্থানে জমেছে কচুরিপানার জঞ্জাল। নৌপথে যাতায়াতকারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। হ্রদে মাছ আহরণে জেলেদেরও দুর্ভোগে পোহাতে হয়। এতে জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। সম্প্রতি কচুরিপানায় আটকে পড়া পর্যটকদের মধ্যে এসএম রিয়াদ জিলানী জানান, শুভলং ঝর্ণা থেকে ফেরার পথে সুবিশাল কচুরিপানার একটি ঝাঁক বোট আটকা পড়েন। এরপর আর উপায় না পেয়ে ৯৯৯-এ ফোন করেন। জারুলছড়ি পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা এক ঘন্টা কচুরিপানা পরিষ্কার করে আমাদের (পর্যটকদের) উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এবিষয়ে জারুলছড়ি পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত নায়েক মো. আশিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবনের মায়া তুচ্ছজ্ঞান করে কাপ্তাই লেকে সাঁতার কেটে কচুরিপানার ঝাঁকের কাছে পৌঁছায়। কচুরিপানার কাছাকাছি গিয়ে দা, শাবাল দিয়ে কচুরিপানা কাটতে কাটতে সামনের দিকে এগুতে থাকে। দীর্ঘ এক ঘন্টা কচুরিপানা পরিষ্কার করে পর্যটকদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ইঞ্জিনবোট চালক বাইট্যা চাকমা জানান, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানায় ইঞ্জিন চালিত বোটের পাখা আটকে যায়। এজন্য বাড়তি সময় লাগে। অনেক সময় বোটের যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে যায়। কচুরিপানায় জটের কারণে অতিরিক্ত তেল লাগে। নৌপথে যাতায়াতকারী শিক্ষক হিরন কুমার অধিকারী জানান, রাঙামাটি সদর উপজেলা কাইন্দ্যার মুখ এলাকা কচুরিপানায় সয়লাভ হয়ে গেছে। কাপ্তাই হ্রদে যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। এতে করে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হয়। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকষণ করেন। বাজারে তরি-তরকারি বিক্রি করতে কয়েকজন জানান, কচুরিপানার কারণে নৌপথে হাট বাজারে আসতে বেশি সময় লাগে। রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দীন সেলিম জানান, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানা জন্য সুবলং, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় নৌ চলাচলে সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়াও যাত্রী পরিবহন ও প্রয়োজনীয় মালপরিবহনেও কচুরিপানায় প্রভাব ফেলে। কচুরিপানা অপসারণ করা খুবই জরুরি। এজন্য আরো সমন্বতিভাবে কাজ দরকার জানান তিনি। বিএফডিসি রাঙামাটি ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার এম তৌহিদুল ইসলাম জানান, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার কুপ বা জট যেখানে যেখানে আছে একটু বাধার সৃষ্টি করছে। কচুরিপানার কুপগুলো/জটলা পরিস্কার বা সড়ানো জন্য জেলেদের ও সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার আসলেই একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কচুরিপানার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ করা হবে জানান তিনি।